বিডিনিউজ ১০ রিপোর্ট: ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাসহ ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। নুসরাত মারা যাওয়ার ৬ মাস ১৩ তিন পর বৃহস্পতিবার সকালে এ রায় দেওয়া হয়।
দেশ ও বিদেশে বহুল আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রায় দেশের গণমাধ্যমের পাশাপাশি বিদেশি গণমাধ্যমগুলোরও সংবাদ শিরোনাম হয়। ব্রিটিশ প্রভাবশালী পত্রিকা গার্ডিয়ান, বিবিসি-সহ ভারত, পাকিস্তান, কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার কয়েকটি গণমাধ্যম গুরুত্ব দিয়ে এ সংবাদ প্রকাশ করে।
গার্ডিয়ান তাদের অনলাইন সংস্করণে নুসরাতের ছবিসব এই হত্যা মামলার খবর প্রকাশ করেছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ১৯ বছরের ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় তাকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরের ছোট শহর ফেনীতে গত এপ্রিলে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি (১৯) কে হত্যা করা হয়। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছিলেন নুসরাত। বৃহস্পতিবার আদালত নুসরাতের দুই বান্ধবী ও প্রধান শিক্ষকসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ধরনের হত্যা মামলা যে দেশটিতে বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকে সেখানে নুসরাত হত্যার মামলার রায় খুব অল্পদিনের মধ্যে দেয়া হয়েছে।
আল জাজিরা বলেছে, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটি ইসলামিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনার পর এক মাদ্রাছাত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায় প্রকাশ করেছেন আদালত। মাদ্রাসার অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকসহ ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
এএফপি’র খবরে বলা হয়েছে, ১৯ বছর বয়সী এক ছাত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার দায়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের একটি আদালত ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার হাতে যৌন হয়রানির শিকার হন নুসরাত। এ ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। মামলা তুলে নিতে আসামিপক্ষ নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে। নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন নুসরাত।
এর জেরে ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিতে গেলে ডেকে নিয়ে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ৮০ শতাংশ পোড়া শরীর নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে পাঁচ দিন লড়ার পর মারা যান নুসরাত। এ ঘটনায় সোনাগাজী থানায় হত্যা মামলা করে নুসরাতের পরিবার।